কর্মী নির্বাচনের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো পদ্ধতি নেই। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন পদ্ধতিতে কর্মী নির্বাচন করে থাকে।
তবে বৃহদায়তন ও মাঝারি প্রতিষ্ঠান কর্মী নির্বাচনের ব্যাপারে যে পদ্ধতি অনুসরণ করে তা নিম্নে আলোচনা করা হলো :
১। বিভাগীয় রিকুইজিশন প্রাপ্তি: কর্মী নির্বাচন প্রক্রিয়ার শুরুতে কোথায়, কতজন ও কী ধরনের যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মীর প্রয়োজন তা শ্রমিক কর্মী বিভাগকে জানাতে হয়। বিভিন্ন বিভাগ হতে রিকুইজিশন পাওয়ার পর কর্মী নির্বাচনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়ে থাকে ।
২। বিজ্ঞপ্তি প্রদান: শ্রমিক কর্মী ব্যবস্থাপনা বিভাগ শূন্য পদ পূরণের জন্য দৈনিক সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদিতে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সম্ভাব্য প্রার্থীদের কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করা হয়ে থাকে। দরখাস্তে প্রার্থীর পূর্ণনাম, ঠিকানা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, বয়স, জাতীয়তা, বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদিসহ দরখাস্ত গ্রহণের শেষ তারিখ উল্লেখ থাকে ।
৩। আবেদনপত্র গ্রহণ ও বাছাই: বিজ্ঞপ্তিতে সাড়া দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রার্থীরা আবেদনপত্র জমা দেয়। আবেদনপত্র পাওয়ার পর তাতে ভুল আছে কিনা পরীক্ষা করে উপযুক্ত আবেদনপত্র বাছাই করে প্রার্থীর লিখিত বা সাক্ষাৎকার পরীক্ষার জন্য ইন্টারভিউ কার্ড ইস্যু করা হয় ।
৪ । নিযুক্তি পরীক্ষা গ্রহণ: কর্মীদের যোগ্যতা যাচাইয়ের জন্য এ পর্যায়ে নিম্নোক্ত পরীক্ষাসমূহ নেওয়া যেতে পারে
(ক) লিখিত পরীক্ষা: লিখিত পরীক্ষায় অনেকগুলো অভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও সাধারণ জ্ঞান যাচাই করা হয় । তাছাড়া প্রার্থীর হাতের লেখা এবং লিখন ক্ষমতা সম্পর্কে জানা যায় ।
(খ) মৌখিক পরীক্ষা: নিয়োগের জন্য লিখিত পরীক্ষা গ্রহণের পর যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় তাদের ব্যক্তিগত সাক্ষাতের জন্য নির্বাচন বোর্ডে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান করা হয়। এতে প্রার্থীর শারীরিক যোগ্যতা, ব্যক্তিত্ব, আচার-আচরণ, বুদ্ধিমত্তা, প্রবণতা ইত্যাদি অবস্থা জানা যায় ।
৫। প্রাথমিক ও সাময়িকভাবে নির্বাচন: উপরোক্ত প্রক্রিয়া অনুসরণের মাধ্যমে কোন প্রার্থী যোগ্য বলে বিবেচিত হলে তাকে প্রাথমিক ও সাময়িকভাবে নির্বাচন করা হয়। অনেক ক্ষেত্রে এরূপ নির্বাচনের সংবাদ প্রার্থীকে জানানো হয় না ।
৬। স্বাস্থ্য পরীক্ষা: প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত প্রার্থীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। এক্ষেত্রে প্রার্থীর দেহের ওজন, উচ্চতা, দৃষ্টিশক্তি, কর্মক্ষমতা ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয় ।
৭। প্রার্থীর ব্যক্তিগত ইতিহাস অনুসন্ধান: চূড়ান্ত নিয়োগদানের পূর্বে প্রার্থীর অতীত কার্যাবলি যেমন-চরিত্র, আচার-আচরণ, কর্মক্ষমতা ইত্যাদি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করা হয় । প্রাপ্ত তথ্য অনুকূলে হলে চূড়ান্ত নিয়োগ দেওয়া হয়, অন্যথায় তালিকা হতে তার নাম বাদ দেওয়া হয় ।
৮। নিয়োগপত্র প্রদান: প্রার্থী সকল পরীক্ষায় যোগ্য বিবেচিত হলে তাকে সাধারণত অস্থায়ীভাবে নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং তার ঠিকানায় নিয়োগপত্র প্রেরণ করা হয়। এতে চাকরিসংক্রান্ত শর্তাবলি ও কাজে যোগদানের সর্বশেষ তারিখের উল্লেখ থাকে ।
৯। যোগদানের রিপোর্ট গ্রহণ: নিয়োগপত্রের আলোকে প্রার্থী নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কর্মকর্তার কাছে যোগদানের রিপোর্ট পেশ করেন । রিপোর্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করলে কর্মী নির্বাচন প্রক্রিয়ার সমাপ্তি ঘটে ।
উপরোক্ত আলোচনার আলোকে বলা যায় যে, বাংলাদেশের সরকারি, আধাসরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে প্রায়ই উপরোক্ত পদ্ধতিতে কর্মী নির্বাচন করা হয়।
আরও দেখুন...